কাজী নজরুল ইসলাম এর শ্বাশত প্রেমের কবিতা ও গান শ্বাশত প্রেমের কবিতা ও গানের রচয়িতা কাজী নজরুল ইসলাম। আমার কাছে যতটা না বিদ্রোহী হিসেবে রয়েছেন নজরুল তারচেয়ে অনেক গুণ বেশি প্রেমের কবি হিসেবে।
বেশ কিছুদিন যাবত পছন্দের নজরুলগীতি গুলোর গীতিকাব্য লিখে সংগ্রহ করছিলাম। বেশ কিছু জমে গেছে। আরো অনেক অনেক গান যা এখনো লেখার সময় পাচ্ছি না। তাই ভগ্নাংশ প্রকাশ করছি।
বিঃদ্রঃ এইখানের সব গুলার বানান অথবা কিছু শব্দ এদিক ওদিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে না দেখলেও কিচ্ছু যাইবো আইবো না আমার
কাজী নজরুল ইসলাম এর শ্বাশত প্রেমের কবিতা ও গান
আবারো বলে রাখি, আমি ইয়ুটিউব নির্ভর মানুষ। আমি ইয়ুটিউবে গান শুনি তাই লিঙ্ক ইয়ুটিউবেরই দিলাম। তবে কেউ ভুল করে ভাববেন না যেন আমি ইয়ুটিউবে নজরুল কে খুজছি।নয়ন ভরা জল গো তোমার আঁচল ভরা ফুল
ফুল নেব না অশ্রু নেব ভেবে হই আকুল।।
ফুল যদি নিই তোমার হাতে
জল রবে গো নয়ন পাতে
অশ্রু নিলে ফুটবে না আর প্রেমের মুকুল।।
মোর প্রিয়া হবে এস রানী
দেব খোপায় তাঁরার ফুল
কর্ণে দোলাবো তৃতীয়া তিথি
চৈতী চাঁদের দুল।।
কন্ঠে তোমার পরাব বালিকা
হংস সারির দুলানো মালিকা
বিজলি জরিণ ফিতায় বাধিব
মেঘরঙ এলো চুল।।
জোছনার সাথে চন্দন দিয়ে
মাখাব তোমার গায়ে
রামধনু হতে লাল রং ছানি
আলতা পরাব পায়।
আমার গানের সাতসুর দিয়া
তোমার বাসর রচিব ও প্রিয়া
তোমারে ঘিরিয়া গাহিবে
আমার কবিতার বুলবুল।।
পদ্মার ঢেউ রে
মোর শূণ্য হৃদয়
পদ্ম নিয়ে যা যারে
এই পদ্মে ছিল রে যার রাঙ্গা পা
আমি হারায়েছি তারে।।
মোর পরান বঁধু নাই
পদ্মে তাই মধু নাই নাই রে
বাতাস কাঁদে বাইরে
সে সুগন্ধ নাই রে
মোর রূপের সরসীতে
আনন্দ মৌমাছি নাহি ঝঙ্কারে।।
ও পদ্মা রে ঢেউয়ে তোর ঢেউ ওঠায়
যেমন চাঁদের আলো
মোর বঁধুয়ার রূপ তেমনি
ঝিল্মিল করে কৃষ্ণ-কালো।
সে প্রেমের ঘাটে ঘাটে বাঁশী বাজায়
যদি দেখিস তারে দিস এই পদ্ম তার পায়
বলিস কেন বুকে আশার দেয়ালী জ্বালিয়ে
ফেলে গেল চির-অন্ধকারে।।
পেয়ে অবলা ঘটালে জ্বালা
বাজায় কালা বাঁশের বাঁশী
মোহন স্বরে হৃদ পিঞ্জরে
করিলো মোরে মন উদাসী।।
খোল এ মন পাগল পারা
করলে বাঁশী আপন হারা
সে মধু স্বরে সুধা যে ঝরে
প্রেম সাগরে সদা যে ভাসি।।
বাঁশীটি মন করলে চুরি
ভাংলে বুকে প্রেমের চুরি
অবলা বলে ভুলালে ছলে
পরালে গলে প্রেমের ফাসি।।
চেয়ো না সু নয়না আর চেয়ো না
এ নয়ন পানে
জানিতে নাহিকো বাকি সই ও আঁখি
কি যাদু জানে।।
একে ঐ চাওনি বাঁকা সুরমা আঁকা
তায় ডাগর আঁখি
বধিতে তায় কেন সাধ যে মরেছে
ঐ আঁখির বাণে।।
কাননে হরিণ কাঁদে সলিল ফাঁদে
ঝুরছে সফরি
বাকায়ে ভুরুর ধনু ফুল অতনু
কুসুম সরহানে
জ্বলিছে দিবস রাতি মোমের বাতি
রূপের দেয়ালি
নিশি দিন তাই কি জ্বলি পরছো গলি
অঝর নয়নে।
মিছে তুই কথার কাটায় সুর বিধে হায়
হার গাথিস কবি
বিকিয়ে যায় রে মালা আয় নিরালা
আঁখির দোকানে
চেয়ো না সু নয়না আর চেয়ো না
এ নয়ন পানে।।
উচাটন মন ঘরে রয় না
প্রিয়া মোর
ডাকে পথে বাঁকা তব নয়না
প্রিয়া মোর।।
ত্যাজী আর লোক লাজ
সুখ সাধ গৃহ কাজ
নিজ গৃহে বনবাস সয়না
প্রিয়া মোর।।
লইয়া স্মৃতির লেখা
কত আর কাঁদি একা
ফুল গেলে কাঁটা কেন যায়না
প্রিয়া মোর।।
আজও মধুর বাঁশরী বাজে
গোধুলী লগনে বুকের মাঝে।।
আজও মনে হয় সহসা কখনো
জলে ভরা দুটি ডাগর নয়ন
ক্ষনিকের ভুলে সেই চাঁপা ফুলে
ফেলে ছুটে যাওয়া লাজে।।
হারানো দিন বুঝি আসিবে না ফিরে
মন কাঁদে ক্যান স্মৃতির তীরে
মন কাঁদে কেন।
তবু মাঝে মাঝে আশা জাগে কেন
আমি ভুলিয়াছি ভোলে নি সে যেন
গোমতীর তীরে পাতার কুটিরে
আজও সে পথ চাহি সাজে।।
ব্রজগোপী খেলে হোরি
খেলে আনন্দ নব ঘণ
শ্যাম সাঝে।।
পিরীতি ফাঁদ মাখা গোরীর সঙ্গে
হোলি খেলে হোরী উন্মাদ রঙ্গে
বসন্তে এ কোন কিশোর দুরন্ত
রাঁধা রে যে নিতে এল পিচকারী হাতে।।
গোপী নিরাহানে অপাংক খরসর
ভ্রুকুটি বঙ্গ অনংগ আবেশে
জরজর থর থর শ্যামের অঙ্গ।
শ্যামল তনুটে হরিত কুঞ্জে
অশোক ফুটেছে যেন পুঞ্জে পুঞ্জে
রঙ পিয়াসে মন ভ্রমর গুঞ্জে
ঢাল আরো ঢাল রঙ প্রেম যমুনাতে।।
প্রিয় এমন তার যেন যায় না বৃথায়
পরি চাঁপা রঙের শাড়ী খয়েরী টিপ
জাগে বাতায়নে জ্বালি আঁখি প্রদীপ
মালা চন্দন দিয়ে মোর কালা সাজাই।।
তুমি আসিবে বলে সুদূর তিথি
জাগে চাঁদের তৃষ্ণা লয়ে কৃষ্ণা তিথি
কভু ঘরে আসি কভু বাহিরে চাই।।
আজি আকাশে বাতাসে কানাকানি
জাগে বনে বনে নব ফুলের বাণী
আজি আমার কথা যেন বলিতে পাই
যেন বলিতে পাই, যেন যায় না বৃথায়।।
মোর ঘুম ঘোরে এলে মনোহর
নম নম নম নম নম নম
শ্রাবণ মেঘে নাচে নটবর
রম ছম ছম ছম রম ছম।।
শিয়রে বসি চুপি চুপি চুমিলে নয়ন
মোর বিকশিল আবেশে তনু
নীপসম নীরুপম মনোরম।।
মোর ফুল বনে ছিল যত ফুল
ভরি ডালি দিনু থালি দেবতা মোর
হায় নিলেনা সে ফুল
চিঠি বেভুল নিলে তুলি
খোপা খুলি কুসুম ডোর।
স্বপনে কিযে কয়েছি তাই গিয়াছ চলি
জাগিয়া কেঁদে ডাকি দেবতায়
প্রিয়তম প্রিয়তম প্রিয়তম।।
হারানো হিয়ার নিকুঞ্জ পথে
কুড়াই ঝরা ফুল একেলা আমি
তুমি কেন হায় আসিলে হেথায়
সুখের সরগ হইতে নামি।।
চারিদিকে মোর উড়িছে কেবল
শুকানো পাতা আর মলিন ফুলদল
বৃথায় সেথা হায় তব আঁখি জল
ছিটাও অবিরল দিবস যামিন।।
এলে অবেলা পথিক বেভুল
বিধেছে কাঁটা নাহি যবে ফুল
কিদিয়ে বরণ করি ও চরণ
নিভিছে জীবন জীবনস্বামী।।
প্রিয় যাই যাই বোল না
আর কোর না ছলনা
না না না।।
আজও মুকুলিয়া হিয়া মাঝে
না বলা যত কথা বাজে
অভিমানে লাজে বলা যে হলনা
না না না।।
কেন শরমে বাধিল কে জানে
আঁখি তুলিতে নারিনু আঁখি পানে।
প্রথম প্রণয় ভীরু কিশোরী
যত অনুরাগ তত লাজে মরি
এত আশা সাধ চরণে দোলনা
না না না।।
অঞ্জলি লহো মোর সঙ্গীতে
প্রদীপ শিখা সম কাপিছে প্রাণ মম
তোমারে সুন্দর বন্দিতে সঙ্গীতে।।
তোমার দিবালয়ে কিসুখে কি জানি
দুলে দুলে ওঠে আমার দেহ খানি
আরতী নৃত্যের ভঙ্গীতে সঙ্গীতে।।
পুলকে বিকশিল প্রেমের শতদল
গন্ধে রূপে রসে করিছে টলমল।
তোমার মুখে চাহি আমার বাণী যত
লুটাইয়া পরে ঝরা ফুলের মত
তোমার পদতল রঞ্জীতে সঙ্গীতে।।
আকাশে আজ ছড়িয়ে দিলাম প্রিয়
আমার কথার ফুল গো
আমার গানের মালাগো
কুড়িয়ে তুমি নিয়ো।।
আমার সুরের ইন্দ্রধনু
রচে আমার ক্ষনিক তনু
জড়িয়ে আছে সেই রঙ্গে মোর
অনুরাগ অমিয়।।
মোর আঁখির পাতায় নাই দেখিলে
আমার আঁখি জল
মোর কন্ঠের সুর অশ্রু ভারে
করে টলমল।
আমার হৃদয় পদ্ম ঘিরে
কথার ভ্রমর কেঁদে ফিরে
সেই ভ্রমরের কাছে আমার
মনের মধু পিয়।।
নাই চিনিলে আমায় তুমি
রইবো আধেক চেনা
চাঁদ কি জানে কোথায় ফোটে
চাঁদনী রাতে হেনা।।
আধো আঁধার আধো আলোতে
একটু চোখে আলাপ পথে
জানিতাম তা ভুলবে তুমি
আমার আঁখি ভুলবে না।।
আমারই সব পরিচয়
সেই সঞ্চয় লয়ে
হয়না সাহস তোমায় যাব
মনের পাখা কয়ে।
একটু চেনার মধু পিয়ে
বেড়াই শুধু গুন গুনিয়ে
তুমি জান আমি জানি
আর কেহ জানেনা।।
মেঘ মেদুর বরষায় কোথায় তুমি
ফুল ছড়ায়ে কাঁদে বনভূমি।।
ঝুরে বারিধারা ফিরে এস পথ হারা
কাঁদে নদী তটচুমি।।
রুমুঝুম রুমুঝুম নূপুর বাজে
আসিল রে প্রিয় আসিল রে।।
কদম্ব কলি শিহরে আবেশে
বেণীর তৃষ্ণা জাগে এলোকেশে
হৃদি ব্রজধাম রদ তরঙ্গে
প্রেম আনন্দে ভাসিল রে।।
ধরিল রূপ অরূপ শ্রীহরি
ধরণী হল নবীনা কিশোরী
চন্দ্রার কুঞ্জ ছেড়ে যেন কৃষ্ণ
চন্দ্রমা গগনে হাসিলো রে।
আবার মল্লিকা মালতি ফোটে
বিরহ যমুনা উথলি ওঠে
রোদন ভুলে রাঁধা গাহিয়া ওঠে
সুন্দর মোর ভালবাসিলো রে।।
শাওন রাতে যদি স্নরণে আসে মোরে
বাহিরে ঝড় বহে নয়নে বারি ঝরে
ভুলিও স্মুতি মম, নিশীথ স্বপন সম
আচলের গাথামালা ফেলিও পথ পরে ।।
ঝুরিবে পুবালি বায় গহন দূর বনে
রহিবে চাহি তুমি একেলা বাতায়নে
বিরহি কুহু কেকা গাহিবে নীপশাখে
যমুনা নদী পাড়ে শুনিবে কে যেন ডাকে
বিজলী দ্বীপশিখা খুজিবে তোমায় প্রিয়া
দুহাতে ঢেকো আখি যদি গো জলে ভরে ।।
বুলবুলি নীরব নার্গিস বনে
ঝরা বন গোলাপের বিলাপ শুনে ।।
শিরাজের নওরোজে ফাল্গুন মাসে
যেন তার প্রিয়ার সমাধির পাশে
তরুন ইরান কবি কাঁদে নিরজনে ।।
উদাসীন আকাশ থির হয়ে আছে
জল ভরা মেঘ লয়ে বুকের মাঝে ।
সাকীর শারাবের পিয়ালার পরে
সকরুন অশ্রুর বেলফুল ঝরে
চেয়ে আছে ভাঙ্গা চাঁদ মলিন আননে ।।
মোরা আর জনমে হংস মিথুন ছিলাম
ছিলাম নদীর চরে
যুগলরুপে এসেছি গো আবার মাটির ঘরে ।
তমালতরু চাঁপা লতার মতো
জড়িয়ে কত জনম হল গত
সেই বাধনের চিহ্ন আজো জাগে
জাগে হিয়ার থরে থরে ।।
বাহুর ডোরে বেধে আজো ঘুমের ঘোরে যেন
ঝড়ের বন লতার মতো লুটিয়ে কাদ কেন?
বনের কপোত কপোতাক্ষীর তীরে
পাখায় পাখায় বাধা ছিলাম নীড়ে
চিরতরে হলো ছাড়াছাড়ি
নিঠুর ব্যাধের শরে ।।
খেলিছ এ বিশ্বলয়ে
বিরাট শিশুর আনমনে।
প্রলয় সৃষ্টি তব পুতুল খেলা
নিরজনে প্রভু নিরজনে।।
শূণ্যে মহা আকাশে
তুমি মগ্ন লীলা বিলাসে
ভাঙ্গিছ গড়িছ নীতি ক্ষণে ক্ষণে
নিরজনে প্রভু নিরজনে।।
তারকা রবি শশী
খেলনা তব হে উদাসী
পড়িয়া আছে রাঙা
পায়ের কাছে রাশি রাশি।
নিত্য তুমি হে উদার
সুখে-দুখে অবিকার।
হাসিছ খেলিছ তুমি আপন সনে
নিরজনে প্রভু নিরজনে।।
আমায় নহে গো ভালোবাসো শুধু
ভালোবাসো মোর গান
বনের পাখিরে কে চিনে রাখে
গান হলে অবসান ।
চাদেরে কে চায় জোসনা সবাই যাচে
গীত শেষে বীণা পড়ে থাকে ধূলি মাঝে
তুমি বুঝিবে না
আলো দিতে কত পোড়ে
কত প্রদীপের প্রাণ ।
যে কাটা লতার আখিঁজল
ফুল হয়ে উঠে ফুটে
ফুল নিয়ে তার দিয়েছো কি কিছু
শূন্য পত্র পুটে ।
সবাই তৃষ্ণা মেটায় নদীর জলে
কি তৃষা জাগে সে নদীর হিয়া তলে
বেদনার মহা সাগরের কাছে করো সন্ধান ।
এত জল ও – কাজল চোখে
পাষানী আনলে বল কে ?
টলমল জল মোতির মালা
দুলিছে ঝালর –পলকে ।।
দিল কি পুব – হাওয়াতে দোল ,
বুকে কি বিঁধিল কেয়া ?
কাঁদিয়া কুটিরে গগন
এলায়ে ঝামর অলকে।।
চলিতে পৈচি কি হাতের
বাধিল বৈচি কাটাতে ?
ছাড়াতে কাচুলির কাঁটা
বিধিল হিয়ার ফলকে ।।
যে দিনে মোর দেওয়া – মালা
ছিঁড়িলে আনমনে সখি ,
জড়াল যুঁই – কিসুমী – হাড়
বেণীতে সেদিন গুলো কে ।।
যে পথে নীর ভরণে যাও
বসে রই সে পথ – পাশে
দেখি নিত কার পানে চাহি
কলসীর সলিল ছলকে ।।
মুকুলী মন সেধে সেধে
কেবলি ফিরিনু কেদে ,
সরসীর ঢেউ পলায় ছুটি
না ছুতেই নলিন – নোলকে ।।
বুকে তোর সাত সাগরের জল
পিপাসা মিটল না কবি ,
ফটিক – জল ! জল খুঁজিস যেথায়
কেবলি তড়িৎ ঝলকে ।।
চোখ গেল চোখ গেল কেন ডাকিস রে
চোখ গেল পাখি রে
তোর চোখে কাহারো চোখ পড়েছে নাকি রে
চোখ গেল পাখি রে ।
তোর চোখের বালির জ্বালা জানে সবাই রে
জানে সবাই
চোখে যার চোখ পড়ে তার ওষুধ নাইরে
তার ওষুধ নাই
কেঁদে কেঁদে অন্ধ হয় কাহার আঁখিরে
চোখ গেল পাখি রে ।
তার চোখের জ্বালা বুঝি
নিশি রাতে বুকে লাগে
চোখ গেল ভুলে রে পিউ কাহা পিউ কাহা
বলে তাই ডাকিস অনুরাগে রে
ওরে ,
বনপাপিয়া কাহার গোপন পিয়া ছিলি আর জনমে
আজো ভুলতে নারি আজো ঝুরে হিয়া
ওরে পাপিয়া বল যে হারায় তাহারে কি
পাওয়া যায় ডাকিরে ।
তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়
সেকি মোর অপরাধ?
চাঁদেরে হেরিয়া কাঁদে চকোরিণী
বলে না তো কিছু চাঁদ।।
চেয়ে চেয়ে দেখি ফোটে যবে ফুল
ফুল বলে না তো সে আমার ভুল
মেঘ হেরি ঝুরে চাতকিনী
মেঘ করে না তো প্রতিবাদ।
জানে সূর্যেরে পাবে না
তবু অবুঝ সূর্যমুখী
চেয়ে চেয়ে দেখে তার দেবতারে
দেখিয়াই সে যে সুখী।।
হেরিতে তোমার রূপ-মনোহর
পেয়েছি এ আঁখি, ওগো সুন্দর।
মিটিতে দাও হে প্রিয়তম মোর
নয়নের সেই সাধ।।
সখী সে হরি কেমন বল
নাম শুনে যার এত প্রেম জাগে
চোখে আনে এত জল।।
সে কি আসে এই পৃথিবীতে
গাহি রাধা নাম বাঁশরীতে
যার অনুরাগে বিরহ যমুনা
হয়ে ওঠে চঞ্চল।।
তারে কি নামে ডাকিলে আসে
কোন রূপ ও গুন পাইলে সে
রাধাসম ভালবাসে।
সখী শুনেছি সে নাকি কালো
জ্বালে কেমনে সে এত আলো
মায়া ভুলিতে মায়াবী সে নাকি
করে গো মায়ারও ছল।।
কাজী নজরুল ইসলাম এর শ্বাশত প্রেমের কবিতা ও গান
মালা যখন গাঁথ তখন পাওয়ার সাধ যে জাগে
মোর বিরহে কাঁদ যখন আরও ভালো লাগে।
পেয়ে তোমায় যদি হারাই
দূরে দূরে থাকি গো তাই
ফুল ফোটায়ে যায় গো চলে চঞ্চল বুলবুল... কাজী নজরুল ইসলাম এর শ্বাশত প্রেমের কবিতা ও গান
0 comments:
Post a Comment